• শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৫ ১৪৩১

  • || ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গুলিবিদ্ধ দিনমজুরের চিকিৎসায় সন্তান বিক্রি নয়, দত্তক দেন স্ত্রী

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ দিনাজপুর সদর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার দিনমজুর আব্দুর রশিদের চিকিৎসা করানোর জন্য নবজাতক সন্তানকে বিক্রি নয়, দত্তক দিয়েছিলেন তার স্ত্রী রোকেয়া। যদিও গণমাধ্যমে প্রচার হয় ঐ নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করা হয়েছিল।

সোমবার রাতে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের একটি পরিবারের কাছে দত্তক দেওয়া ঐ নবজাতক সন্তানকে ফেরত আনতে গিয়েছেন মা রোকেয়াসহ কয়েকজন। যদিও অভাবের কারণে প্রথমে দত্তক দেওয়া সন্তান ফেরত নিতে রাজি হননি রোকেয়া।

জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চেকআপের জন্য নেয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন আব্দুর রশিদ। পরে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর স্ত্রীকে নিয়ে ফিরে আসেন রাজবাড়ী এলাকায়। কিন্তু ৮ আগস্ট আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আবার প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসায় স্ত্রী রোকেয়ার অবস্থাও ভালো ছিল না।

ওইদিন প্রতিবেশীরা তাৎক্ষণিকভাবে চাঁদা তুলে রশিদকে দিনাজপুরের এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। পরদিন অস্ত্রোপচারে হয় তার। ঐদিনেই বাসায় ফুটফুটে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন রোকেয়া। তবে স্বামীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে তিনদিন বয়সী সন্তানকে দত্তক দেন রশিদের স্ত্রী রোকেয়া। যে পরিবার নবজাতক সন্তানকে দত্তক নিয়েছিল, তারা রশিদের চিকিৎসার জন্য ২৫ হাজার টাকা দেয়।

প্রতিবেশীরা জানান, রশিদ-রোকেয়া দম্পতির কোনো জায়গা-জমি নেই। অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হিসেবে থাকেন তারা। তাদের পরিবারে আরো একটি সন্তান রয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকেও রশিদকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। ওয়ার্ড জামায়াতের আমির আবদুর রহিম জানান, ভবিষ্যতেও তারা রশিদের পাশে থাকবেন।

দিনাজপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবির হোসেন বলেন, তারা রশিদের বাড়িতে গেছেন। তারা শিশুটিকে ফিরিয়ে এনে দিতে চেয়েছেন। কিন্তু আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় রশিদের স্ত্রী রোকেয়া সন্তানকে নিতে চান না। হয়তো সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে আমরা তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করবো।

এ বিষয়ে দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল রায়হান বলেন, আন্দোলনে আহতদের মধ্যে যাদের তথ্য আমাদের কাছে কাছে, আমরা তাদের নানাভাবে সহায়তার চেষ্টা করছি। আমরা রশিদ ও তার পরিবারের পাশে থাকবো।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –