• রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

‘আদালত রায় না দেওয়া পর্যন্ত সরকারের কিছু করার নেই’

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –

প্রকাশিত: ১৫ জুলাই ২০২৪  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা ইস্যু এখন আদালতের অধীনে রয়েছে। আদালত কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সুযোগ দিয়েছে, কথা বলার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু তারা আদালতের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে রাস্তায় বসে সমাধান চায়, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলে। এ বিষয়ে আদালত কোনো রায় না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের কিছুই করার নেই।

রোববার গণভবনে সাম্প্রতিক চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারীদেরকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে যে, যাদের কোটা আছে তাদের কোনো মেধা নেই। অথচ প্রিলিমিনারি, লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভাতে কোনো কোটা নেই। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়। এছাড়া যেসব কোটা পূর্ণ হয় না, সেখানে মেধাতালিকা থেকে নেয়া হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নেতিবাচক ও অবমাননাকর মন্তব্য করা হচ্ছে। অথচ এই বীর মুক্তিযোদ্ধারাই ১৯৭১ সালে নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন। অন্যদিকে, রাজাকাররা পাকিস্তানি শোষকদের পক্ষ নিয়ে দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল। তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান-নাতিরা সুবিধা পাবে না তো কি রাজাকারদের সন্তান-নাতিরা পাবে?

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্যই কোটা সুবিধা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের সময় এক শ্রেণির মানুষ ঘরে বসে থেকে নানা ধরনের মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালিয়েছিল। এতে বিরক্ত হয়ে সেই সময় কোটা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এরপর ফলাফল কী হয়েছিল? ফরেন সার্ভিসে দুইজন ও পুলিশে মাত্র চারজন নারী সুযোগ পেয়েছিল। ২৩টি জেলায় একজন লোকও বিসিএসে চাকরি পায়নি।

চীন সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সফরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে ২১টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর ও নবায়ন করা হয়েছে। যারা বলে বেড়াচ্ছে চীন সফরে বড় ধরনের প্রাপ্তি নেই, তারা জেনে-বুঝে বলছে না। এই শ্রেণির লোকজন মানসিকভাবে অসুস্থ। আমি ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসার পর প্রতিটি ক্ষেত্রেই এ ধরনের নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে। আমি এসব কথা খুব একটা গুরুত্ব দেই না।

চীনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের ২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।

চীন ও ভারত সফর নিয়ে নেতিবাচক সংবাদের বিষয়ে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু টানেল, এক্সপ্রেসওয়েসহ বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সহযোগিতা করেছে এবং করে যাচ্ছে। ভারতের কাছ থেকে আমরা প্রয়োজনীয় অনেক কিছু আমদানি করতে পারছি, তারাও আমাদের সড়কপথের ট্রানজিট সুবিধা নিচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক আছে বলেই এসব হচ্ছে। সুতরাং যারা এসব সুবিধা ভোগ করে আবার চীন ও ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা চোখ থাকতে অন্ধ ও কান থাকতে বধির।

প্রশ্নফাঁসকারীরা আইনের আওতায় এলে যারা প্রশ্নফাঁসের সুবিধা নিয়ে প্রশাসনের বড় পদে বসে আছেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, প্রশ্নফাঁসকারী ও সুবিধাভোগী দুজনই সমান অপরাধী। তাদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। প্রশ্নফাঁস শুরু হয় বিএনপির আমলে, হাওয়া ভবন থেকে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের অন্যত্র বদলি করে দিয়েছি। ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বিএনপির যেসব অনিয়ম করেছিল, সেগুলোকে সঠিক পথে ফিরিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়েছিলাম। দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল হয়েছে। এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হয়েছি বলেই দুর্নীতিবাজ ধরা পড়ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অব্যাহত থাকবে। আমি মনে করি না, এজন্য আমার ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।

– কুড়িগ্রাম বার্তা নিউজ ডেস্ক –