কুড়িগ্রামে বন্যার আশংকা, আপন চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা

কুড়িগ্রামে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে সময় মতো রোপা আমন চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। চাষের জমিতে এখন কৃষকদের সরব উপস্থিতি। তবে চর,দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলে আমন আবাদ এখনো পুরোপুরি শুরু হয়নি। তবে তারা নাবি জাতের আমন আবাদের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়াও চর ও নিম্নাঞ্চলে বীজতলার সংকটে পতিত পরে আছে বহু চাষযোগ্য আবাদি জমি।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১ লাখ ২০ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৭ হাজার ৯২৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলে রোপা আমন আবাদ চলছে ধীরগতিতে।

সরেজমিন জেলার চর, দ্বীপচর ও নিম্নাঞ্চলগুলো ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার কোন কোন জমিতে পানি জমে আছে, কোথাও বালু পড়েছে। আর যেসব জমিতে পলি পড়েছে কৃষকরা ব্রি জাতের বীজ ছিটিয়েছেন। তবে দেরিতে বন্যার পানি নামা ও বীজতলা নষ্ট হওয়ায় চর ও নিম্নাঞ্চলের কৃষকরা ধারদেনা করে চড়া দামে বীজতলা সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ শুরু করলেও,  আবারও বন্যার আশংকায় দিন গুজরাচ্ছেন এ অঞ্চলের ভুক্তভোগী কৃষকরা।

জেলা সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়নের মাঠের পাড় এলাকার কৃষক আজগার আলী বলেন, বন্যায় আমার এখানকার বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। উঁচু এলাকা থেকে চড়া দামে বীজতলা কিনে জমিতে রোপণ করছি। এর আগে তো আমার বিভিন্ন সবজি পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতো সব খরচ করে আবাদ করেও ভয় হয় আবার যদি বন্যা হয় তাহলে আর শেষ রক্ষা করতে পারবো না।

কথা হয় একই এলাকার কৃষক লোকমান, আজিজুল, আমিরের সাথে তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, বৃষ্টি না হওয়ার কারণে সেচের পানিতে জমি তৈরি করছি। আমন আবাদ করার জন্য, এ রোপা-আমনের চাষ  না করলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নাবি জাতের রোপা-আমন চারা রোপণ করা যাবে। এ ছাড়াও আগাম রবি ফসল আবাদে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এবারের বন্যায় কুড়িগ্রামে ৫০ হাজার কৃষকের ১০৫ কোটি টাকা মূল্যমানের ক্ষতি হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।